বাংলায় একটা প্রবাদ আছে “দাঁত থাকতে কেউ দাঁতের মর্যাদা বোঝে না”। আসলেও দেখা যায়, দাঁতকে এমন অবহেলা করি আমরা যে ভীষণ কোনো ক্ষতি হয়ে যাবার আগে টের পাই না। এসব ক্ষতি হবার আগেই কিছু লক্ষণ দেখে আপনার যাওয়া উচিৎ ডেন্টিস্টের কাছে।
সাধারণত ছয় মাসে একবার করে ডাক্তার দেখানোটা জরুরী। আপনি যদি দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখেন এবং কোনো সমস্যা না থাকে তাহলেও আপনার উচিৎ ছয় মাসে একবার দাঁতের ডাক্তার দেখানো। কারণ আমাদের কাছে দাঁত সুস্থ আছে বলে মনে হলেও এতে কোনো সমস্যা থাকতে পারে যা শুধুমাত্র দাঁতের ডাক্তারই ধরতে পারবেন।
এ ছাড়াও আপনার যদি ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন বা অন্য কোনো জটিল রোগ থেকে থাকে তবে একটু ঘন ঘন এবং নিয়মিত দাঁতের ডাক্তার দেখানোটা ভালো।
গর্ভবতী অবস্থাতেও দাঁতের ডাক্তারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাটা জরুরী। এছাড়া আপনার যদি পান-সুপারি খাওয়া বা ধূমপানের অভ্যাস থাকে, অতিরিক্ত চা-কফি পানের অভ্যাস থাকে তাহলেও অন্যদের চাইতে ঘন ঘন দাঁতের ডাক্তারের কাছে যাওয়াটা প্রয়োজন।
কী কী লক্ষণ দেখা গেলে খুব দ্রুত দাঁতের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, এ বিষয়ে জানিয়েছেন দন্ত রোগ বিশেষজ্ঞ আফরোজা আক্তার লাকি। তিনি বর্তমানে আদাবরের লাকি ডেন্টাল ক্লিনিক এ কর্মরত আছেন। তার মতে, এসব লক্ষণ দেখা গেলে ডেন্টিস্ট দেখানোটা জরুরী, নয়তো দাঁতের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
১) দাঁত ও মাথায় তীব্র ব্যাথা
মাঝে মাঝে ঠাণ্ডার কারণে বা অন্য কোনো কারণে দাঁত ব্যাথা করে এবং এই ব্যাথা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। এতে চিন্তিত হবার তেমন কিছু নেই। কিন্তু ব্যাথা যদি বারবার ফিরে আসে, বেশকিছুদিন ধরে স্থায়ী থাকে, ফোঁড়া টনটন করার মতো অসহ্য ব্যাথা হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাওয়াটা দরকার। এ ছাড়া সহনীয় ব্যাথাও যদি বেশিদিন ধরে থাকে তবে তাকে গুরুত্ব দিতে হবে।
দাঁতের পাশাপাশি মাথাও ব্যাথা করে অনেক সময়। মাথা ব্যাথা করলে অনেকে বুঝতে পারেন না কিন্তু এটাও দাঁতে সমস্যা থাকার লক্ষণ হতে পারে।
২) মাড়ি বা গাল ফুলে যাওয়া
মুখের ভেতরে নিয়মিত পরিষ্কার না করার কারণে অনেক সময়ে দাঁত ও মাড়ির ইনফেকশন হয়ে থাকে। এতে যদি মাড়ি এবং মাড়ির পাশাপাশি গাল সহ ফুলে যায় তবে অবিলম্বে ডেন্টিস্ট দেখানোটা জরুরী।
৩) মুখের ভেতর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ
অনেক সময়ে টুথব্রাশ পরিবর্তন করলে, বেশি জোর দিয়ে ব্রাশ করলে বা প্রথম প্রথম ফ্লস করতে গেলে অল্প কিছু রক্তক্ষরণ হতে পারে। এটা মোটামুটি স্বাভাবিক। কিন্তু রক্তক্ষরণ যদি অনেকদিন ধরেই হতে থাকে তবে তা চিন্তার কারণ।
ড.লাকি জানান, অনেক ক্ষেত্রে দাঁতে ক্যালকুলাস জমার কারণে অনেকে ঘুম থেকে উঠে দেখেন মুখে অনেকটা রক্ত জমে আছে। এমন হলেও ডাক্তার দেখাবেন অবশ্যই।
৪) দাঁত শিরশির করা
দাঁত ক্ষয় হয়ে যাবার ফলে দাঁত শিরশির করে। মুলত গরম বা ঠাণ্ডা খাবার খাওয়ার সময়ে দাঁতে এমন অনুভুতি বেশি হয় এবং রোগী খাবার খেতে বা পান করতে পারেন না। প্রিয়.কমকে ড.লাকি বলেন, দাঁত শিরশির করাটাকে মানুষ মোটেই আমলে আনে না কিন্তু এটাও দাঁতের ক্ষতির একটি লক্ষণ।
৫) দাঁতে দাগ পড়ে যাওয়া
এটা সাধারণত যারা পান-সিগারেট বেশি খেয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রে হয়। এই দাগ থেকে পরে দাঁতের খারাপ কোনো রোগ হতে পারে তাই ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে এসব দাগ দূর করাটা দরকারি।
Sign up here with your email
ConversionConversion EmoticonEmoticon